প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই নেতাকর্মীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে নানামুখী সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশিষ্টজন মনে করছেন, পুলিশ চাইলে গুলি না ছুড়েও ভিন্ন উপায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। একান্তই বাধ্য হলে প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করা যেত। তা না করায় পরিস্থিতি 'ঘোলাটে' হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে পুলিশের প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও কৌশল না থাকাকেও দায়ী করছেন কেউ কেউ।'
-আবার কেউ কেউ মনে করেন, এটা আসলে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় দক্ষতার অভাব। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক ২৪খবরবিডিকে বলেন, বড় ধরনের আন্দোলন-জনসমাবেশের ক্ষেত্রে গুলি বা মৃত্যু এড়িয়ে সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের যে প্রস্তুতি, দক্ষতা ও কৌশল দরকার, তা আমাদের পুলিশের নেই। জনগণের মনস্তাত্ত্বিক জায়গা বোঝার জন্য যে প্রশিক্ষণ দরকার, সেটা তাদের দেওয়া হয়নি। উন্নত দেশের পুলিশকে প্রতিটি ইভেন্ট মোকাবিলার জন্য আলাদা কৌশল শেখানো হয়। কিন্তু আমাদের এখনও 'ট্র্যাডিশনাল পুলিশিং' চলছে। এ ছাড়া অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে বলীয়ান থাকতে চান। সেই সঙ্গে এটা ব্যবহার করে পরে লাভবান হতে চান। জনরোষের ক্ষেত্রে পুলিশ সংলাপের মাধ্যমে (আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে। আর পরিস্থিতি বেশি সহিংস হলে প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে; কিন্তু গুলি চালানো ঠিক হয়নি।
-এদিকে ভোলার সচেতন মহল মনে করে, পুলিশ পেশাদার আচরণ করলে এত হতাহতের ঘটনা ঘটত না। ভোলা জেলা উন্নয়ন ও স্বার্থরক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু বলেন, উভয় পক্ষেরই সংযত থাকা উচিত ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ, জলকামান ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারত। তাতে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটত না। ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংঘাত এড়াতে আগেই গুলির মতো সিদ্ধান্ত না নিয়ে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
'জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ছালাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, পুলিশ সেদিন পুরোপুরি পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে গুলি করতে হলে হাঁটুর নিচে গুলি করার বিধান রয়েছে।
গুলি না ছুড়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যেত পারতো
-সেটার বদলে পুলিশ সরাসরি গুলি শুরু করেছে, যার ফলে এত হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের জেলা সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী বলেন, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বাড়াবাড়ির কারণেই ভোলার ঘটনাটি ঘটেছে। আন্দোলনকারীদের চেয়ে পুলিশই এজন্য বেশি দায়ী। মিছিল করা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার। সেখানে পুলিশ কেন বাধা দেবে? পুলিশের উপস্থিত দু-একজনের হঠকারিতাই এ ঘটনার মূল কারণ।'